ক্রিকেটের অন্যতম সেরা একটি দলের নাম দক্ষিণ আফ্রিকা। দক্ষিন আফ্রিকা দল শক্তিমত্তার বিচারে আমাদের থেকে অনেক এগিয়ে। বাংলাদেশ দল দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তিন ফর্মেটেই খেললেও এখনো শুধুমাত্র ওয়ানডেতে তাদের হারাতে পেরেছে। টেস্ট আর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তাদের এখনো হারানোর গৌরব অর্জন করতে পারেনি বাংলাদেশ।
ওয়ানডে ক্রিকেটে দক্ষিন আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশ এখনো পর্যন্ত মুখামুখি হয়েছে ২০বার। ওয়ানডেতে আফ্রিকার বিপক্ষে আমাদের জয় সংখ্যা ৪, হার ১৫, একটি ড্র। আফ্রিকার বিপক্ষে সর্বশেষ ওয়ানডে ম্যাচে বাংলাদেশ জিতেছিল।
ওয়ানডে ক্রিকেটে আফ্রিকার বিপক্ষে আমাদের সিরিজ জয় একটি। সেটা ২০১৫ সালে। হ্যাঁ ২০১৫ সালের আজকের এই দিনে আমরা দক্ষিণ আফ্রিকাকে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ২-১ তে সিরিজ হারিয়েছিলাম।
১৫ জুলাই ২০১৫, চট্টগ্রাম।
সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে ১-১ সমতায় থেকে শেষ ওয়ানডে ম্যাচে জহুর আহমেদ চৌধুরী ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন দক্ষিন আফ্রিকান দলপতি হাসিম আমলা। বৃষ্টি কারণে ম্যাচটি ৪০ ওভারের আয়োজন করা হয়।
প্রথমে ব্যাটিং করতে আফ্রিকার পক্ষে ইনিংসের উদ্ভোদন করতে নামেন ক্যাপ্টেন হাসিম আমলা ও বাঁহাতি ব্যাটসম্যান কুইন্টন ডি কক। দলীয় ৮ রানে মুস্তাফিজের প্রথম শিকার হয়ে ফিরেন ডি কক।
এরপর ক্রিজে আসেন ফাফ ডু প্লেসিস, কিন্তু তিনিও টিকতে পারেন নি বেশীক্ষন! দলীয় ২১ রানে সাকিবের প্রথম শিকারে পরিণত হন প্লেসিস! ফাফের পর ক্রিজে আসেন রাইলি রুসো, ক্যাপ্টেন আমলার সাথে বড় পার্টনারশিপের আসা দেখালেও দলীয় ৪৫ রানে আমলা ফিরেন সাকিবের দ্বিতীয় শিকার হয়ে।
আমলার চলে যাওয়ার পর ক্রিজে আসেন ডেভিড মিলার! মিলার আসার সাথে সাথে রুসো ফিরেন রিয়াদের বলে মুশফিকের হাতে ক্যাচ দিয়ে।
৫ম উইকেট জুটিতে ডেভিড মিলার ও জেপি ডুমিনি গড়েন ৬৩ রানের পার্টনারশিপ। দলীয় রান যখন ১১৩ ব্যাক্তিগত ৪৪ রানে তখন বাংলাদেশ দলপতি মাশরাফির শিকার হয়ে ফিরে যান ডেভিড মিলার!
মিলারের পর একেএকে ফারহান বিহারদিন, কাগিসো রাবাদা ও কাইল এ্যাবোট একে ফিরেন প্যাভিলিয়নে! বাংলাদেশের বোলারদের বোলিং তোপে টিকে থাকতে কষ্ট হচ্ছিলো আফ্রিকান ব্যাটসম্যানদের।
দলের সবার যাওয়া-আসার মধ্যেও অন্যপ্রান্তে দায়িত্বশীল ব্যাটিং করে ফিফটি তুলে নেন জেপি ডুমিনি। ব্যাক্তিগত ৫১ রানে ইনিংসের শেষ বলে রুবেলের বলে তিনি আউট হোন! ততক্ষণে আফ্রিকা নির্ধারিত ৪০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ করে মাত্র ১৬৮ রান।
সিরিজ জিততে টাইগারদের সামনে লক্ষ্যমাত্রা ১৬৯!
বাংলাদেশের পক্ষে ইনিংসের উদ্ভোদন করতে ক্রিজে আসেন আগের ম্যাচের হাফসেঞ্চুরিয়ান সৌম্য সরকার ও তামিম ইকবাল। তামিম ইকবাল আগের ম্যাচে আগ্রাসী ব্যাটিং করলেও এই ম্যাচে তামিম ছিল বেশ ঠান্ডা মেজাজে। ব্যাক্তিগত ১৮ বলের সময় তামিম নিজের প্রথম বাউন্ডারি হাকান।
অন্যদিকে আগের ম্যাচের নায়ক সৌম্য সরকার তার দৃষ্টিনন্দন ব্যাটিং দেখিয়ে মুগ্ধ করে যাচ্ছেন সবাইকে! চট্টগ্রামের বাইশগজে তখন সুভাস ছড়াচ্ছিল সৌম্যর দৃষ্টিনন্দন শটের।
ওপেনিং জুটিতে তামিম-সৌম্য মিলে গড়েন ১৫৪ রানের অনবদ্য একটি পার্টনারশিপ! দল যখন জয় থেকে ১৫ রান দূরে ব্যাক্তিগত ৯০ রানে ইমরান তাহিরের বলে শট কাভারে হাসিম আমলার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন সৌম্য! সেঞ্চুরির আক্ষেপ নিয়ে মাঠ ছাড়েন সৌম্য।
সৌম্যর আউটের পর ক্রিজে আসেন লিটন দাস! অন্যদিকে ওপেনার তামিম ইকবাল তুলে নিয়েছেন অর্ধশতক। ৭টি চারের সাহায্যে ৭৭ বলে ৬১ রান করে অপরাজিত থাকেন তামিম!
ইমরান তাহিরের বলে মিড উইকেটের দিকে বাউন্ডারি হাকিয়ে জয়সূচক রান তুলে নেন লিটন দাস! তিনি অপরাজিত থাকেন ৫(৫) রানে! তার শটের সাথে সাথে বাংলাদেশ দক্ষিন আফ্রিকাকে ৯ উইকেট হারিয়ে প্রথমবারের মতো ওয়ানডে সিরিজ জিতে নেয়।♥♥
বাংলাদেশের পক্ষে ব্যাট হাতে ৭৫ বলে ১৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ১২০ স্ট্রাইক রেটে ৯০ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচ সেরা হন সৌম্য সরকার।
পুরো সিরিজে ব্যাট হাতে দুর্দান্ত ব্যাটিং করে প্লেয়ার অফ দ্যা সিরিজও নির্বাচিত হয়েছিলেন সৌম্য সরকার।
Reviewer: Argha Majumder.
Kotha : https://link.kotha.app/app/user/preview/34bh5smnf
Instagram: https://instagram.com/argha_majumder_?igshid=wdz8tvrovx0